গণিতবিহীন কিছু খেলা ও অনুভব / দিশারী মুখোপাধ্যায় / আংশিক

৫৬)
আর তাকেও পাশ ফিরে শুতে হবে, তাতে যদি পিঁপডেগুলো চাপা পড়ে 
মারা যায়, তবে নিরুপায়।খোঁজ করলেই যে অন্বিষ্টজনকে পাওয়া যাবে 
এমন নয়,নেট পরিষেবার উপর নির্ভর করে।এই নির্ভরতার চেন অনেকদীর্ঘ।অনিশ্চিত 

গান্ধর্বমতে নিশ্চয়তা নেই তাই 
সোশাল ম্যারেজ।ধুকপুকুনি থাকে, বাড়ে
সুতরাং রেজিস্ট্রি ম্যারেজ।কিন্তু সেখানেও
অ্যান্টিরেজিস্ট্রি অ্যাপস চালু আছে 

চিঠি না পৌঁছানোর জন্য পোস্টম্যানকে দোষ দিই।যার বাড়ি নেই, ঠিকানা 
নেই, তাকে চিঠি লেখা কেন? চিঠি জানে পোস্টম্যান নির্দোষ।রাস্তাকেও 
এই বুদ্ধিটা শেখানো হয়েছে।রহস্য না থাকলে কবিতা হয় না।সব গোলাকার 


৫৭)
রাস্তাকেও এই বুদ্ধিটা শেখানো হয়েছে।রহস্য না থাকলে কবিতা হয় না।
সব গোলাকার হলে গড়ানো ক্রিয়াপদটি সক্রিয় থাকত না ।সাঁতলানোর 
সময় তেজপাতার ব্যবহারও বেশ উপাদেয় হয়।সন্দেহের কিছুটা দেহ দরকার 

সমস্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রয়েছে 
খিদে মানেই সেটা পেটের 
খড়্গহীন ,শিংহীন মাথা কাজের নয় 
মহাভারত অশুদ্ধ হয় হবে 

বন্ধচোখ অনুমতি ছাড়াও কিছু দেখে।যা দেখে সেটা গোপন থাকাই ভালো 
লঙ্কার ঝাল সকলের সহ্য হয় না।পাথরের শিকড়ে ঝাঁকুনি খুবই প্রয়োজন
মাঝেমধ্যে ।জানি ভিটামিন-সি অন্যত্রও পাওয়া যায়।তাতেও কিন্তু গোপনীয়তা চাই 


৫৮)
পাথরের শিকড়ে ঝাঁকুনি খুবই প্রয়োজন মাঝেমধ্যে।জানি ভিটামিন-সি অন্যত্রও 
পাওয়া যায়।তাতেও কিন্তু গোপনীয়তা চাই।পার্কে, ছাতিমগাছের তলায় 
তোমার কানের লতিতে মাংসের কোয়ালিটি বুঝতে চেয়েছিলাম।ইতিহাসে অপঠিত 

ইলেকট্রনের সংখ্যা নিয়ে তর্ক করেন পদার্থবিদরা
অপদার্থতার গভীরতা তারা বোঝে না 
সক্রেটিসকে মারা হেমলকের সাধ্য নয় 
ঐতিহাসিকরাই বা বুঝলেন কই

প্রকাশ্য রাস্তায় একটা খুন হয়েছে।জনগণ খুনিকে ধরেছে হাতেনাতে 
পুলিশের হাতে তুলে দিল।ভাবল খুনের যুগ এখানেই শেষ।খুনি বুঝল 
যেখানে যাকিছু চোখ দেখে, প্রায়শই ঠিক দেখে না।লেন্স দরকার হয় 


৫৯)
যেখানে যাকিছু চোখ দেখে, প্রায়শই ঠিক দেখে না।লেন্স দরকার হয় 
বাংলায় আমরা লেন্সের একটা নাম দিয়েছিলাম,পরাকলা।সে নাম 
তার পছন্দ হয়নি।লেন্স উত্তল বা অবতল হোক, সত্য বলবেই,রামকৃষ্ণ কথামৃতে নেই 

তোমার অফিসের বাইরে খুব বৃষ্টি 
একতলা অফিসটা বাদ দিয়ে  
তিনতলা, চারতলা বাড়ি সব ডুবে গেছে 
উঠোনের জল কাগজের নৌকায় সেজে ওঠে 

একটা বাস এসে থামল স্ট্যান্ডে।বাসে উঠে পড়ল স্বপ্ন।সে বাসে ড্রাইভার
নেই।পঞ্চাশ সিটের বাস সম্পূর্ণ ফাঁকা।অথচ কে যেন বলল- চালকবিহীন 
এই বাসে যতক্ষণ ঘুমাবে ততক্ষণ চলবে।ঘুমের মধ্যে আরো পঞ্চাশটা সিট বাড়িয়ে নিলাম 


৬০)
কে যেন বলল- চালকবিহীন এই বাসে যতক্ষণ ঘুমাবে ততক্ষণ 
চলবে।ঘুমের মধ্যে আরো পঞ্চাশটা সিট বাড়িয়ে নিলাম, কারণ 
জানি আরো অনেক লোক উঠবে।সেই অনেকের মধ্যে অন্বিষ্ট একজন থাকবে 

বহুদূরের রাস্তা আমাদের, হয়তো 
কয়েক আলোকবর্ষ হতে পারে।এ বাস 
সেখানে যাবে কিনা সংশয় নেই 
যতক্ষণ ঘুমাবে ততক্ষণ সে সত্য 

ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখি সে বাস নেই।অথচ যাওয়ার তাগিদ আছে ।
কেউ একজন অপেক্ষায় আছে।মৌচাক বয়ে বেড়াচ্ছে মৌ-রানি।পিছন থেকে 
সমরে চলেছে একদল সৈনিক।সৈনিকদের হাতে লাল টুকটুকে হরতন


৬১)
মৌচাক বয়ে বেড়াচ্ছে মৌ-রানি।পিছন থেকে সমরে চলেছে একদল 
সৈনিক।সৈনিকদের হাতে লাল টুকটুকে হরতন।তরল পাথর এসে 
পায়ের কাছে আছড়ে পড়ছে। ডাকছে -বেলাভূমি , ও বেলাভূমি 

যে বিতরণ করতে এসেছে তুমি তাকে 
ভিক্ষুক ভেবেছ।যে দান করতে এসেছে 
তাকে ভেবেছ প্রবঞ্চক।সংসার বিষয়ে 
কোনো খবরই এখন কাগজে ছাপে না 

উল্কা আসা এখন একটা দৈনন্দিন ঘটনা।একে আর উল্কা বলা 
মানায় না ।পুষ্পবৃষ্টি, চন্দনবৃষ্টি - এসব বলার চালাকিও মানুষ 
এখন বোঝে।পণ্য ছাড়া আর কিছুই নয় তোমার 
মধুরতম মধুও 


৬২)
পুষ্পবৃষ্টি, চন্দনবৃষ্টি - এসব বলার চালাকিও মানুষ 
এখন বোঝে।
পণ্য ছাড়া আর কিছুই নয় তোমার মধুরতম মধুও।যদিও তারা
বোঝে না এসব চালাকি, চতুর্দিকের পলিউশনের জন্মদাতা মানুষেরই ঘুম  

আমার বাড়ি আমাকে নিয়ে বিব্রত।জলে 
যে-আকাশের মুখ দেখা যায়, উড়াল থাকে না 
একটা লবণ জনিত স্বাদ ব্যাটারির আয়ু 
বাড়িয়ে দেয়।গাড়ি তবু অচল করে তোলে রাস্তাকে 

কোন মুহূর্তে ,কে, কী চিন্তা করে ,সেটা জানা থাকলেও আমরা 
চিন্তাকে পোষ মানাতে পারিনি।শেকল একমাত্র জানত স্পার্টাকাসের 
তৃষ্ণা কতটা প্রবল।আর আমাদের ভুল দিয়েই তৈরি সব শেকল 


৬৩)
শেকল একমাত্র জানত স্পার্টাকাসের তৃষ্ণা কতটা প্রবল।আর আমাদের 
ভুল দিয়েই তৈরি সব শেকল। যেসব অলঙ্কার তোমরা পরে আছ 
তাদের উৎপত্তির মূলে ছিল শৃঙ্খল।শৃঙ্খলেরও হয়  প্রেমভাব।হয়েছে 

নদীর যাওয়া আসার রাস্তা চুরি করেছ 
চুরির সম্পত্তি এখন বিপুল কলেবরে 
তোমাকেও চুরি করতে চায়।খোদ সুপ্রিমকোর্ট
তার অক্ষমতা নিয়ে অত্যন্ত নাজুক 

দিকনির্ণয়ের যত উপায় চালু ছিল ,প্লাস্টিকের তৈরি ভাঙা পুতুলের 
পোকায় কাটা স্বপ্ন।চাষ-আবাদের নতুন কিছু উপায় উদ্ভাবন 
জরুরি এখন। একটু কাছে এসো - এরকম আবেদন 


৬৪)

চাষ-আবাদের নতুন কিছু উপায় উদ্ভাবন জরুরি এখন। একটু 
কাছে এসো - এরকম আবেদন যাত্রা করেছিল যে ঠিকানার দিকে 
সেখানে এখন নাকি প্রবল ভূমিক্ষয়।ভেঙে পড়বে প্রাসাদ 

শঙ্খলাগা প্রেম থেকে আকাশের নীল 
চুম্বনের ঠোঁট থেকে জন্মায় আলিঙ্গন 
বিষের রক্তাক্ত হৃদয় কাঁদে।দংশন করার 
সুযোগ তাকে দিতেই হবে।কবিতার দায় 

জাহাজডুবির খবরের মধ্যে আছে বিপন্ন সমুদ্রেরও আর্ত সৌন্দর্য। 
সৃষ্টি করছে মধুর যন্ত্রণা।বিশ থেকে পঁচিশ কিলোমিটার, আনুমানিক
দূরে যন্ত্রণার উৎপত্তিস্থল।বেলাভূমিতে ছড়িয়ে পড়েছে।

Popular posts from this blog

অপেক্ষা একটি অসমাপিকা ক্রিয়া

স্বর ব্যঞ্জনের কথোপকথন

পাপের গুনাহ দেখি না